হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, আয়াতুল্লাহ আ'রাফি তেহরানের সরকারী হল রুমে অনুষ্ঠিত “নাসরুল্লাহ একটি আদর্শ” শীর্ষক আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে বলেছন, দখলদার যায়নবাদী সরকার ৭০ বছর তার নিজের মধ্যে নিরাপত্তার বলয়ে রক্ষিত ছিল৷ কিন্তু বর্তমানে প্রতিরোধ অক্ষের নজিরবিহীন প্রচেষ্টায় তাদের এই নিরাপত্তায় ফাটল ধরেছে৷
তিনি বলেছেন, সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ হিজবুল্লাহর কর্মকান্ডকে ফিলিস্তিন থেকে আলাদা করতে পারতেন৷ কিন্তু তিনি তা করেননি৷ তিনি মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের জন্য শহীদ হয়েছেন৷ তিনি শিয়া-সুন্নীকে এক পতাকার তলে নিয়ে আসার জন্য সংগ্রাম করেছেন৷ তিনি ফিলিস্তিনকে স্বাধীন করতে সংগ্রাম করেছেন৷ এবং পরিশেষে তিনি নতুন একটি সভ্যতা বিনির্মাণের ভিত্তি স্থাপন করতে সংগ্রাম করেছেন৷
ইরানের হাওজায়ে ইলমিয়ার সম্মানিত সভাপতি বলেছেন, সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ নিজের জীবনের শান্তি ও নিরাপত্তা কামনা করতেন না৷ তিনি আরো বলেছেন, সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ কোনো দলের বা কোনো গোষ্ঠীর স্বার্থ উদ্ধারে কাজ করতেন না; বরং তিনি সমগ্র মুসলিম উম্মাহর স্বার্থ নিয়ে তিনি কাজ করতেন৷ এর থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হল- তিনি অন্যান্য ধর্মের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন দৃষ্টিতে তাকাতেন এবং তাদের সাথে আন্তরিকভাবে চলাফেরা করতেন৷
বর্তমানে প্রতিরোধ অক্ষ অধিক শক্তির অধিকারী হচ্ছে এবং এই গুণগত শক্তি পরবর্তী প্রজন্মের কাছে স্থানান্তরিত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, দখলদার যায়নবাদী সরকার সর্বদাই হামলাকারী হিসেবে ছিল এবং তারা সমগ্র মুসলিম বিশ্বে তাদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকাতো৷ সেই তারাই আজ আত্মরক্ষাকারী বাহিনীতে পরিণত হয়েছে৷
আয়াতুল্লাহ আ'রাফি বলেছেন, বর্তমানে দখলদার ইসরায়েলি সরকার তাদের শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভীত থাকা সত্বেও তারা আজ নড়বড়ে ও ভঙ্গুর অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে৷ দখলদার যায়নবাদী সরকার আজ ইতিবাচক বা অর্ধ ইতিবাচক চেহারা নিয়ে, নেতিবাচক বা শোচনীয় চেহারা নিয়ে এমন প্রতিমূর্তি ধারণ করেছে যে, তারা গত এক বছরে ফিলিস্তিনের ৫০ হাজার নিরীহ ও নিষ্পাপ মানুষকে হত্যা করেছে৷
হাওজায়ে ইলমিয়ের সম্মানিত সভাপতি বলেছেন, ’গ্রেটার ইসরায়েল’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে বিভোর দখলদার ইসরায়েল সরকার বর্তমানে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছে৷ তারা মুসলমানদের অনেক ক্ষতি করেছে৷ তবে তারা নিজেরাও অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে৷ আমাদের স্পষ্ট কথা হলো- হয় অধিকৃত ফিলিস্তিনে সকলের অংশগ্রহণে স্বাধীনভাবে নির্বাচন দিতে হবে, নতুবা আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে এবং যৌক্তিকভাবে সকল মাযহাব ও দলের সাথে বৈধভাবে প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নিতে হবে, যা মূলত ইসলামী বিপ্লবের রাহবারের (হাফি.) অভিমত৷
আমাদের এই প্রতিরোধ যোদ্ধাদের মধ্যে ধৈর্য, সহনশীলতা ও অটল মনোবাসনা বজায় থাকবে এবং তাদের অর্জন, পুনঃনির্মাণ এবং এই ঐশী সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার অটুট ইচ্ছা বজায় থাকবে- এই প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেছেন, ইসলামী রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে যে, তারা যেন দখলদার ইসরায়ললের সাথে নিজেদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ককে বিচ্ছিন্ন করে দেয়৷ মুসলিম বিশ্বের আলেম-উলামা ও স্কলারদের প্রতি আহ্বান থাকবে তারা যেন নিজেদের চিন্তা-চেতনার মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বকে আলোকিত করেন এবং প্রতিরোধ যুদ্ধের ক্ষেত্রকে মসৃণ ও সংকটহীন করে তোলেন৷
আয়াতুল্লাহ আ'রাফী বলেছেন, যোগাযোগ মাধ্যম, শিল্পী ও কুশীলব এবং সাহিত্যিকদের প্রতি আমার আহ্বান থাকবে, তারা যেন প্রতিরোধ সংগ্রামকে নিজেদের অন্যান্য কর্মকান্ডের উপর প্রাধান্য দেন৷ সমগ্র মুসলিম উম্মাহর প্রতি আহ্বান থাকবে, তারা যেন নিজেদের সমস্ত পূঁজি ও বিনিয়োগকে ইসলামের উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য এবং আমাদের চিরশত্রু দখলদার ইসরায়েল শাসককে পরাজিত করার জন্য কাজে লাগায়৷